শেখ রাজীব হাসান:
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৭নং ওয়ার্ড টঙ্গী বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘সোনাভান বিপণী বিতান”মার্কেট ।ভবনটি প্রযুক্তিগত দিক থেকে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভেঙ্গে ফেলার জন্য পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে একাধীকবার নোটিশ জারি করলেও নির্দেশনার কোন তোয়াক্কা করছেনা মার্কেট কতৃপক্ষ। অপরদিকে নদীর পারসহ রাস্তার দুইধারে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকান পাট,বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাবসায়ীকে একাধীকবার জরিমানা করলেও ব্যাবসায়ীরা অবাধে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ বিক্রয় করে যাচ্ছে। আব্দুল্লাহপুর ব্রীজের উপর থেকে সেনা কল্যাণ কমপ্লেক্স পর্যন্ত রাস্তার পূর্ব পাশে বসছে অসংখ্য অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকান,এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্চে বাজারের দোকানদার ও সাধারণ ব্যাবসায়ীরা।বাজারের ময়লা বর্জ ফেলে পরিবেশ দূষণসহ নষ্ট হচ্ছে নদীর পার।অবহেলায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে তুরাগ নদী।
এলাকাবাসী জানায়,মার্কেটের বিভিন্ন জায়গায় ছাদ ও দেয়ালের সিমেন্টের আস্তর ধসে ভিতরের রড দেখা যাচ্ছে। মার্কেটটিরনিচে ও উপরে প্রায় ৪ শতাধীক দোকান রয়েছে।সোনাভান বিপনী বিতান মার্কেটের ব্যাবসায়ীরা মার্কেটের কার্যক্রম চালু রাখলে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।মার্কেট কমিটির সভাপতি হানিফ মন্ডল স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে জিসিসির নোটিশ অবমাননা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার নির্দেশ দিচ্ছে। কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার অবশ্যই মার্কেট কমিটিকে নিতে হবে। মার্কেটের ২য় তলার ব্যাবসায়ীরা জানায়,পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে কোন নোটিশ পাঠানোর ব্যাপারে মার্কেট কতৃপক্ষ আমাদের জানায়নি।মার্কেট ভাঙ্গার ব্যাপারে নোটিশ এসে থাকলে মার্কেট কতৃপক্ষের উচিত ছিলো বিষয়টি আমাদের অবগত করা। এবিষয়ে কথা বলতে চাইলে মার্কেটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের সম্মুখে আসতে রাজি হননি।পরবর্তীতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সভাপতি হানিফ জানায়,সিটি কর্পোরেশনের নোটিশ পেয়েছি সময় মত সরিয়ে নিবো।১তলা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয় কি করে।সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশনা না মেনে মার্কেট কার্যক্রম পরিচালনায় দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় ভার কে নিবে এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন,দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে এটা একামাত্র আল্লাহ্ জানে,এর দায়ভার আমাদের না।
মার্কেট পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে সাধারণ দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে সতর্ক করে গত বৃহস্পতিবার (৫নভেম্বর) মার্কেট কতৃপক্ষকে নোটিশ করেছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জোন-১)এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও অঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সোহরাব হোসেন।
এ বিষয়ে ৫৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার বলেন,সিটি কর্পোরেশন থেকে একাধীক বার নোটিশ করা হলেও কতৃপক্ষ মার্কেট খালি করার কোন উদ্যোগ গ্রহন করছে না তা আমার বোধগম্য নয়।মার্কেটের বিষয়টি সম্পূর্ণ মেয়র সাহেবের নজরদারিতে রয়েছে।বাজারের বর্জ্য সিটি কর্পোরেশনের গাড়ী এসে নিয়ে যায় কেউ যদি লুকিয়ে নদীতে ময়লা ফেলে তাতে আমরা কি করতে পারি ?নদীর পারে যে দোকানপাট বসে সেইটা দেখার দায়িত্ব নৌ পুলিশের, দোকানদাররা কীভাবে তাদের ম্যানেজ করে ব্যাবসা পরিচালনা করে ? তা আমার জানা নাই।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জোন-১)এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও অঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সোহরাব হোসেন বলেন,বেশ কয়েকবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সতর্কীকরণ নোটিশে লেখা রয়েছে,গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৭নং ওয়ার্ড টঙ্গী বাজার অবস্থিত“সোনাভান বিপণী বিতান”মার্কেট ভবনটি প্রযুক্তিগত দিক থেকে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভেঙ্গে ফেলার লক্ষ্যে ইতিপূর্বে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়েছে।যা অত্র কার্যালয়ের স্বারক নং-১৫৩৬ তারিখ-১২/১১/২০১৯এর পত্রের মাধ্যমে আপনাদের মার্কেটটি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসায়িক মালামাল নিয়ে সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলেও ব্যবসা চারিয়ে যাচ্চেন।এছাড়াও অসংখ্যবার মৌখিকভাবে নোটিশ করা হলেও মার্কেট ত্যাগ করেননি।যা নোটিশ অবমাননার শামিল। মার্কেটের যেকোন দূর্বল অংশ ভেঙ্গে প্রানহানিসহ মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।১ম নোটিশ প্রেরনের তারিখ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় এক বছর গত হয়ে গেছে।তাই উক্ত মার্কেটের ব্যবসায়িকগণ আগামী ১২ দিনের মধ্যে মালামাল সরিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশক্রমে পুনরায় অনুরোধ করা হলো।এ নোটিশ চুড়ান্ত নোটিশ হিসেবে গন্য হবে।